WBUTTEPA B.Ed 4th Semester Notes 
4th Semester Notes

সমাজায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ভূমিকা:- 

সমাজায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে । যেমন ,
  1. আত্ম নিয়ন্ত্রণ  :- নিজেকে নিয়ন্ত্রণ বা  সংযত আচরণ করার সামাজিক শিক্ষা,  বাড়িতে যতটা হয় তার থেকে অনেক বেশি হয় বিদ্যালয়ে । শিক্ষকদের সঙ্গে, সহপাঠীদের সঙ্গে, বিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে  যথাযোগ্য সংযত আচরণ না করলে শাস্তি পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, তাই প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সচেতন থাকতে হয় । শ্রেণিকক্ষে এবং শ্রেণিকক্ষের বাইরে কোথায় কোন ধরনের আচরণ বাঞ্ছনীয় সেটা শিক্ষার্থীরা অনেকসময় খেয়াল রাখে । 
  2. সামাজিক আচরণ :- শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে সাধারনত নতুন সামাজিক আচরণগুলিকে বিশেষ ভাবে আয়ত্ত করে থাকে । সুতরাং সমাজায়নের বিকাশের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য । 
  3. মার্জিত ভাষার ব্যবহার :- শিক্ষার্থীরা বাড়িতে যে ভাষায় , যে ভঙ্গিতে কথা বলে থাকে ,  বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু তা বেশ কিছুটা ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে থাকে । বিদ্যালয় এর অনুমোদিত ভাষা অনেকটাই প্রথা সম্মত এবং মার্জিত প্রকৃতির হয়ে থাকে । 
  4.  দলগত সংহতি :- দলগত সংহতি হচ্ছে শিক্ষার একটি অন্যতম প্রধান হাতিয়ার, সামাজিক জীবন ধারণের জন্য  শিক্ষা নানা সামাজিক গুণের বিকাশ কেন্দ্র এবং একটি শক্তি রূপে কাজ করে থাকে । বিদ্যালয়ের পরিসরের গন্ডি পেরিয়ে এই সংহতি সামাজিক ক্ষেত্রে ও বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায় ।  
  5. সমাজ সচেতনতা :- সমাজ সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা ও কম নয় কিন্তু পরিবারের মধ্যে যে ধরনের সমাজ সচেতনতা সৃষ্টি হয় , তার কিছুটা সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু বিদ্যালয় শক্তিশালী বৃহত্তর অস্তিত্বের সঙ্গে ব্যক্তির সাযুজ্য ঘটায়। যার ফলে সমাজ সচেতনতা অনেকটাই বৃদ্ধি হয়ে থাকে বিদ্যালয়ের মাধ্যমে। 
  6. সামাজিক বিচার বিশ্লেষণ ক্ষমতা  :-সমাজ থেকে মানুষ যদি শুধু গ্রহণ করে অর্থাৎ সামাজিক রীতিনীতি, প্রথা, বিশ্বাস, সংস্কার ইত্যাদিকে আত্মস্থ করে চলে তখন সামাজিক পরিবর্তন বা অগ্রগতি সম্ভব হয় না।  যতক্ষণ না নিজে সমাজায়ন ঘটায়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই বিশেষ গুণটি  বিদ্যালয় এর মাধ্যমে অনেকটাই সঞ্চারিত হয়ে থাকে। 
  7. শিক্ষকের ভূমিকা :-বিদ্যালয়ে সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হলেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীর সমাধান প্রক্রিয়াতে শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুই রকম ভূমিকাই আছে। সুতরাং এক্ষেত্রে শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। 
  8. উচ্চতর শ্রেণীর শিক্ষার্থী :-বিদ্যালয়ে সাধারণত নিম্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা উচ্চ শ্রেণীর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখে। যার সরাসরি প্রভাব লক্ষ্য করা যায় সামাজিক ক্ষেত্রে। 
  9. সহপাঠী এর দল :- শিক্ষার্থীরা বন্ধু – বান্ধব তথা বিভিন্ন সহপাঠীদের মাধ্যমে অনেক কিছু শিক্ষা গ্রহণ থাকে।  সুতরাং  সৎ সঙ্গ এর ফলেও শিক্ষার্থীরা নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। যার ফলে শিক্ষার্থীদের সামাজিকতা অনেকগুণ বৃদ্ধি পায়। 
  10. বিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রভাব :- বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলি  থেকে শিক্ষার্থীরা সামাজিকতার জ্ঞান সংগ্রহ করে থাকে। সুতরাং সমাজায়নের ক্ষেত্রে  বিদ্যালয় ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান গুলোর উল্লেখযোগ্য অবদান অনস্বীকার্য । 




Previous Post Next Post